কুয়াকাটা প্রতিবেদক ॥ কুয়াকাটা পৌর এলাকার নিজ রেকর্ডীয় জমিতে স্থাপনা তুলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও মাছ চাষ করে আসলেও একটি চক্র ষড়যন্ত্রমূলক সরকারী জমির দখলদার হিসেবে চিহ্নিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ওই চক্রটি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিএস জরিপের কাগজপত্র সৃষ্টি করে অসৎ উদ্দেশ্যে হাসিলের জন্য অপ-প্রচার চালিয়ে আসছে এমন অভিযোগ এনে রবিবার বেলা ১১টায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন কুয়াকাটা পৌর এলাকার বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর হাওলাদার।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, বিএনপি সরকারের আমলের গ্রাম সরকার প্রধান মোঃ শাহজাহান মৃধা, জনৈক এনায়েত উদ্দিন দুলাল কচ্ছপখালী বাঁধ পুনরুদ্ধার কমিটির ব্যানারে গ্রামের সহজ সরল মানুষদের ভুল বুঝিয়ে নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করতে আমার ও আমার বাবা সাবেক ইউপি সদস্য হাজী চাঁনমিয়া হাওলাদারের নামে জেলা প্রশাসনের কাছে মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করেন। তাদের সহযোগী এক সময়ের বিএনপি নেতা আঃ রশিদ হাওলাদার রাজনৈতিক পরিচয় গোপন করে বর্তমানে শেখ রাশেল মেমোরিয়াল সমাজ কল্যাণ সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দাবীদার। যিনি জাল জালিয়াত চক্রের সাথে আতাঁত করে বিএস জরিপ করিয়ে আমাদের ভোগদখলীয় মালিকানাধীন জমি আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে মামলা হামলা ও হয়রানী করে আসছে। ওই চক্রটি সাংবাদিক সম্মেলনসহ গনমাধ্যমকর্মীদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে। সাংবাদিকদের মিথ্যা ও বানোয়াট মনগড়া তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশের কারণে তাদেরকে সামাজিকভাবে ও অর্থনৈতিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। এতে তাদের পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জাহাঙ্গীর হাওলাদার দাবী করেন।
জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, শাহজাহান মৃধা ও এনায়েত উদ্দিন দুলাল জেএল ৩৪ নং লতাচাপলী মৌজার এসএ ৩১৯ নং খতিয়ান বিএস ৪৫৯ নং খতিয়ানের ১ একর ৫৫ শতাংশ জমি জোরপূর্বক জবরদখল করে আছে। আমরা জোরপূর্বক দখলের বিরুদ্ধে কলাপাড়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছি। যার মামলা নং সি আর ৩৭০/২০ চলমান রয়েছে। অপরদিকে লতাচাপলী মৌজার সিএস ২৬৩,আর এস ৭২১,এসএ ১১৬০ নং খতিয়ানের ৫৩৪৮,৫৩৪৯ ও ৫৪৮৫ দাগের জমি মূল মালিক সেফারী মগ। সেফারী মগ ছারছিনা পীর সাহেব মাওলানা শাহ মোহাম্মাদ সিদ্দিক এর কাছে বিক্রি করে। ছারছিনার পীরের কাছ থেকে কারী আঃ খালেক ক্রয় করেন। কারী আঃ খালেকের কাছ থেকে ৬-৮-১৯৯৮ সালে ১১৪৯ নং সাব কবলা দলিল মূলে আমার পিতা হাজী মোঃ চাঁন মিয়া হাওলাদার ক্রয় করে। কুয়াকাটা মহাসড়ক সংলগ্ন উক্ত ক্রয়কৃত জমিতে তরঙ্গ নামে একটি খাবার হোটেল নির্মাণ করে বিশ বছর যাবত ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে তারা।
জাহাঙ্গীর হাওলাদার আরও বলেন, গ্রাম সরকার শাহজাহান মৃধা ও এনায়েত উদ্দিন দুলাল নিজেরাই ভূমিদস্যু হিসেবে এলাকায় পরিচিত। গ্রামবাসীদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে কচ্ছপখালী খালের উপর ৪০ বছর পূর্বের বাঁধ বন্ধ করে রেখেছে। ওই বাঁধ দিয়ে কুয়াকাটা-মিশ্রিপাড়া পর্যটকরা যাতায়াত করে থাকে। পৗরসভা কর্তৃক সড়কের সংস্কার কাজ চলমান অবস্থায় ওই চক্রটি কাজ বন্ধ করে দেয়। মিশ্রিপাড়া রাখাইন পল্লী ও বৌদ্ধ মন্দিরে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি বন্ধ করে দেওয়ায় পর্যটকসহ স্থানীয়রা গত ছয়মাস যাবত দূর্ভোগে রয়েছে। গ্রামবাসীররা ওই চক্রটির অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে এদের কাছ থেকে দূরে রয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হাজী চাঁনমিয়া হাওলাদার বলেন, কচ্ছপখালী খাল পনরুদ্ধার কমিটির নাম ব্যবহার করে আমার নামে সরকারী খাল দখলের মিথ্যা অভিযোগ আনে। যা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মহিপুর তহসিলদার সরেজমিনে তদন্ত করলে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তহসিলদার উক্ত তদন্ত প্রতিবেদন গত ২৩ জুলাই জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠিয়ে দেয়। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিরোধীয় জমি নিয়ে পটুয়াখালী জজ আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় আঃ রশিদ গংরা জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিএস জরিপ সম্পন্ন করে। যা আদালত অবমাননার শামিল। সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর হাওলাদার, হাজী চাঁনমিয়া হাওলাদার, আবজাল ফকির, মন্নান হাওলাদার, সাবেক ইউপি সদস্য ফজলুল হকসহ উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি ওই চক্রটির কাছ থেকে পরিত্রাণ পেতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে দাবী জানান। এবিষয়ে আঃ রশিদ হাওলাদার বলেন, ১৯৯৭ সালে রাখাইনদের কাছ থেকে তিনি পারমিউশন দলিলের মাধ্যমে জমি ক্রয় করেন। চাঁন মিয়া হাওলাদার তার পরে ১৯৯৮ সালে খালেক কারীর কাছ থেকে জমি ক্রয় করে। ওই জমি লুজ খতিয়ানের আওতাভূক্ত। তিনি আরও বলেন কখনই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না তিনি। এমন অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করেন তিনি।
Leave a Reply